বর্তমান সময়ে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নতুন এক নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এই নিম্নচাপটি গতকালকের ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে তৈরি হয়েছে এবং আজ সকাল থেকেই তা সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এটি আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে এবং এরপর ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে। ২৬ তারিখ নাগাদ এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ২৭ তারিখ সকালে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর অবস্থান তখন দক্ষিণ-পশ্চিম এবং পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের সংলগ্ন এলাকায় হবে।
মৎস্যজীবীদের জন্য বিশেষ সতর্কতা
এই নিম্নচাপের কারণে প্রথম এবং সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়তে যাচ্ছে মৎস্যজীবী সমাজের উপর। আবহাওয়া দফতর ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে যে, যেসব মৎস্যজীবীরা গভীর সমুদ্রে রয়েছেন, তাদের ২৭ তারিখের মধ্যে উপকূলে ফিরে আসতে হবে। কারণ, এর পর থেকে সমুদ্রের অবস্থা অত্যন্ত উত্তাল হয়ে উঠবে এবং বাতাসের গতিবেগও বাড়বে। ২৮ তারিখ থেকে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলবর্তী এলাকায় মৎস্য ধরার উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ এই তারিখের পর থেকে কোনো জেলেই সমুদ্রে নামা নিরাপদ নয়।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার সম্ভাব্য প্রভাব
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ২৮ তারিখ থেকে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে বৃষ্টি শুরু হবে। প্রথমে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া উপকূলবর্তী অন্যান্য এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতও হতে পারে। ২৯ তারিখে পরিস্থিতি আরও তীব্র হতে পারে। ওইদিন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় একাধিক স্থানে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বাকি জেলাগুলোতেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

৩০ তারিখ পর্যন্ত আবহাওয়ার পরিবর্তন
৩০ তারিখ নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতেও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে। বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ ও পূর্ব বর্ধমান জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে এই পূর্বাভাস এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ পরিবর্তিত হলে, পরবর্তীতে আবহাওয়া দফতর নতুন আপডেট প্রকাশ করবে।
দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার সার্বিক চিত্র
আগামী দুই দিন দক্ষিণবঙ্গে শুষ্ক আবহাওয়া বজায় থাকবে। ২৬ তারিখে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে এক-দুই জায়গায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে, তবে বাকি জেলাগুলোতে রোদ থাকবে। ২৭ তারিখে আবহাওয়া একই রকম থাকতে পারে, শুধু উপকূলের কয়েকটি এলাকায় হালকা বৃষ্টি দেখা যাবে। ২৮ তারিখের পর থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া বদলাতে শুরু করবে।
উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি
উত্তরবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলে একটি দুর্বল পশ্চিমী ঝঞ্ঝা সক্রিয় রয়েছে, যার প্রভাবে আগামী দুদিন দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় এক-দুই জায়গায় হালকা বৃষ্টিপাত হতে পারে। পরবর্তী তিনদিন সেখানে শুষ্ক আবহাওয়া বজায় থাকবে। তবে ২৯-৩০ তারিখ নাগাদ উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে এবং হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলের আবহাওয়া
কলকাতায় আগামী দুদিন আবহাওয়া থাকবে শুষ্ক ও আংশিক মেঘলা। এরপর ২৭ তারিখ থেকে আকাশ ধীরে ধীরে মেঘলা হতে শুরু করবে। ২৮, ২৯ ও ৩০ তারিখ নাগাদ কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ঝোড়ো হাওয়া বা ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা এখনো নিশ্চিত নয়। ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথের উপর নির্ভর করবে কলকাতায় বৃষ্টির তীব্রতা।
উপসংহার
বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এই নিম্নচাপ ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে উপকূলবর্তী পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই মৎস্যজীবী ও সাধারণ মানুষকে আবহাওয়া দফতরের সতর্কবার্তা মেনে চলার অনুরোধ করা হচ্ছে। পরবর্তী আপডেটের জন্য সরকারি বার্তা এবং সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

Hii! আমি কৃষ্ণেন্দু, আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে আন্তরিক ভিনন্দন জানাই। আমি একজন প্রফেশনাল কন্টেন্ট রাইটার। বিগত 4 বছরের এক্সপেরিন্স এর সাথে আমার তৈরি করা লেখা গুলি আপনাদের সামনে তুলে ধরি। আমার লেখা কন্টেন্ট গুলির পেছনে লুকিয়ে থাকে অনেক রিসার্চ অ্যান্ড প্রাথমিক নলেজ যেগুলো দিয়ে আমি কন্টেন্ট প্রস্তুত করি ও আপনাদের সামনে তা তুলে ধরি। আর এই লেখা গুলি যদি আপনাদের হেল্প ফুল লাগে তাহলে অবশ্যই জানিও।