চেক ক্লিয়ারিংয়ে নতুন নিয়ম Failed During Diwali Season: ব্যাংকিং খাতে গ্রাহক সুবিধা বাড়াতে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI) ও ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (NPCI) ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিল। পূর্বে চেক জমা দেওয়ার পর অর্থ গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে জমা পড়তে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগত। কিন্তু নতুন নীতিমালার আওতায়, চেক জমা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই টাকা অ্যাকাউন্টে জমা পড়ার ব্যবস্থা চালু করা হয়। এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য ছিল ডিজিটাল ব্যাংকিং প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত, স্বচ্ছ এবং ঝামেলাহীন করা।

নতুন প্রক্রিয়ার সূচনায় প্রযুক্তিগত বিপর্যয়
কিন্তু এই নতুন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরপরই একাধিক ব্যাংকে বড় ধরনের প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেয়। অনেক গ্রাহক অভিযোগ জানান যে, চেক জমা দেওয়ার পরও টাকা নির্ধারিত সময়ে তাদের একাউন্টে জমা পড়ছে না। এর পাশাপাশি কিছু ক্ষেত্রে চেক “বাউন্স” হওয়ার ঘটনাও ঘটে, যা গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও উদ্বেগ তৈরি করে। বিশেষ করে ৪ এবং ৬ অক্টোবর তারিখে সারাদেশে বিপুল পরিমাণ চেক বাউন্সের ঘটনা ঘটে, যা ব্যাংকিং ব্যবস্থার নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ব্যাংক কর্মকর্তারা ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা এই সমস্যার মূল কারণ হিসেবে “টেকনিক্যাল গ্লিচ” বা পরিকাঠামোগত ত্রুটিকে দায়ী করেন।
RBI-এর হস্তক্ষেপ ও সাময়িক স্থগিতাদেশ
এই পরিস্থিতিতে, RBI তৎক্ষণাৎ হস্তক্ষেপ করে এবং সিদ্ধান্ত নেয় যে দ্রুত চেক ক্লিয়ারিং প্রক্রিয়াটি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হবে। কর্মকর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রথম ধাপের পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়া (৪ অক্টোবর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত) শেষ হওয়ার পর সিস্টেমটি পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। RBI জানিয়েছে, দ্বিতীয় ধাপে (৩ জানুয়ারি থেকে) ব্যাংকগুলিকে তিন ঘণ্টার একটি নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হবে, যার মধ্যে তারা চেকটি বাতিল বা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে সিস্টেমের ত্রুটি অনেকটাই কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সমস্যার মূল কারণ ও সমাধানের উদ্যোগ
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুত ক্লিয়ারিং সিস্টেমে রিয়েল-টাইম প্রসেসিং বাড়ানোর জন্য যে সার্ভার ও সফটওয়্যার ব্যবহৃত হচ্ছিল, সেটির স্কেলিং যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়নি। ফলে চেক ভেরিফিকেশনের সময়সীমা কমে যাওয়ায় তথ্য মিলতে সমস্যা হচ্ছিল। NPCI বর্তমানে এই পরিকাঠামোগত ত্রুটি সারাতে কাজ করছে এবং ব্যাংকগুলির সার্ভার ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা ও গ্রাহকদের আশা
RBI ও NPCI উভয়েই জানিয়েছে, তারা এই নতুন প্রক্রিয়াটি ২০২৫ সালের শুরুতেই আবার চালু করতে চায়, তবে এবার আরও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে। আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় ধাপ শুরু হলে ব্যাংকগুলির জন্য পরিষ্কার গাইডলাইন থাকবে যাতে গ্রাহকরা নির্ভয়ে চেক জমা দিতে পারেন এবং সময়মতো টাকা পেতে পারেন।
এই পদক্ষেপ সফল হলে ভারতের ব্যাংকিং খাত একটি নতুন দিগন্তে পৌঁছাবে, যেখানে চেক ক্লিয়ারিং হবে রিয়েল-টাইম, এবং নগদ লেনদেনের প্রয়োজন আরও কমে যাবে।
উপসংহার
চেক ক্লিয়ারিং ব্যবস্থায় RBI-এর এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। যদিও প্রাথমিক ধাপে কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দিয়েছে, তবে ভবিষ্যতে এই সিস্টেমই হতে পারে ভারতের ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে আধুনিক ও দ্রুততম পরিষেবা। RBI-এর আশ্বাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শুরুতেই নতুন সংস্করণ চালু হলে গ্রাহকদের জন্য ব্যাংকিং হবে আরও সহজ, দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য।

Hii! আমি কৃষ্ণেন্দু, আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে আন্তরিক ভিনন্দন জানাই। আমি একজন প্রফেশনাল কন্টেন্ট রাইটার। বিগত 4 বছরের এক্সপেরিন্স এর সাথে আমার তৈরি করা লেখা গুলি আপনাদের সামনে তুলে ধরি। আমার লেখা কন্টেন্ট গুলির পেছনে লুকিয়ে থাকে অনেক রিসার্চ অ্যান্ড প্রাথমিক নলেজ যেগুলো দিয়ে আমি কন্টেন্ট প্রস্তুত করি ও আপনাদের সামনে তা তুলে ধরি। আর এই লেখা গুলি যদি আপনাদের হেল্প ফুল লাগে তাহলে অবশ্যই জানিও।